বিবিসি
সম্প্রতি সমুদ্রবিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ডক্টর সুয়েসের লেখা বইয়ে যেমন দেখা যায়, শুঁড়ওয়ালা স্বচ্ছ সি কিউকাম্বার, আদিম ডাম্বোস বা কানের মতো পাখা নাড়ানো প্রাণী; সে রকম অলৌকিক ও অদ্ভুত প্রাণীর খোঁজ পাওয়া গেছে সমুদ্রের গভীরে। খবর সিবিসি নিউজ অনলাইনের।
সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, দশ বছর আগে সামুদ্রিক প্রাণী সংক্রান্ত এক শুমারিতে দেখা গেছে, সূর্যের আলো যে পর্যন্ত পৌঁছায় তার চেয়েও ২শ’ মিটার নিচে পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার ৬৫০ প্রজাতির প্রাণী বসবাস করে। এর চেয়েও গভীরে আর কোনো প্রাণী থাকতে পারে না বলেই এতদিন মনে করা হতো। কিন্তু সে ধারণা বদলে দিচ্ছেন লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক ও সমুদ্রের প্রাণী শুমারি দলের প্রধান রবার্ট কারনি। তিনি জানিয়েছেন, গভীর সমুদ্রের অন্ধকারে টিকে থাকা হাজারও প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, যাদের খাদ্য আর শক্তির উত্স হলো বিভিন্ন মৃত প্রাণীর ক্ষয় হয়ে যাওয়া খোলের গুঁড়া, তিমির হাড়ের অংশ, আর তেল বা মিথেন। সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, আগের তালিকায় থাকা দু’লাখ ৩০ হাজার সামুদ্রিক প্রজাতির সঙ্গে নতুন খোঁজ পাওয়া ৫ হাজার ৬শ’ প্রাণী যুক্ত হবে। ২০১০ সালের অক্টোবরে পরবর্তী শুমারির সময় এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। জানা গেছে, এর আগে প্রচলিত মতবাদ অনুসারে বলা হতো, গভীর সাগরের তলায় কোনো প্রাণী থাকতে পারে না। কিন্তু নতুন তথ্য বলছে, সেখানে প্রায় ২০ হাজার প্রজাতির অনাবিষ্কৃত প্রাণী রয়েছে। সমুদ্রের তলদেশের পাহাড়ে ৪০ প্রজাতির প্রবাল, ৫শ’ প্রজাতির এককোষি প্রাণী থেকে বড় স্কুইড পর্যন্ত পেয়েছেন তারা। সমুদ্রের তলার ফাটল আর রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় খাদ্য থেকে জীবনধারণ করা সিল্কি, চুলের মতো ফিলামেন্ট বিশিষ্ট ‘ইয়েতি ক্যারাবস’ প্রজাতির প্রাণীও রয়েছে। সিবিসি আরও জানিয়েছে, গবেষকরা মধ্য-আটলান্টিকে ৪০টি নতুন প্রজাতিসহ মোট ১ হাজার নতুন প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন। ৮০টি দেশের দু’হাজার বিজ্ঞানী সামুদ্রিক প্রাণীদের এই ক্যাটালগ তৈরিতে কাজ করছেন। জানা গেছে, শুমারি শেষে এর ফলাফল নিয়ে তিন খণ্ডের একটি বই প্রকাশ করা হবে।