স্বয়ং শিক্ষিত উদ্ভাবকদের উদ্ভাবন : ১ : স্থানীয় প্রযুক্তিতেই কমিউনিটি রেডিও
টাঙ্গাইল জেলার দেওজা গ্রামের রেডিও মেরামতকারী রামপ্রসাদ দাস স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে কমিউনিটি রেডিও উদ্ভাবন করেছেন। পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এ রেডিও ট্রান্সমিশন যন্ত্র। দোকান ঘরের উপরে বাঁশ দিয়ে বানানো হয়েছে এর এন্টেনা। এ ট্রান্সমিশন যন্ত্রের মাধ্যমে দু’তিন কি.মি. দূরত্বে অনুষ্ঠান প্রচার করা সম্ভব। উদ্ভাবিত রেডিওয়ের মাধ্যমে তিনি এলাকার মানুষের গান শোনান। এই উদ্যমী যুবকের রেডিও মেরামতের দোকানটিই যেন একটি রেডিও সেন্টার। রামপ্রসাদ দাসের তৈরি করা যন্ত্রপাতির সঙ্গে একটি কম্পিউটার জুড়ে দিয়েই সেন্টারের ক্ষমতা এবং কাজের পরিধি সহজেই বাড়ানো যায়। তার স্টেশনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি খুব সাধারণ এবং পরিচালনা করাও খুব সহজ। স্টেশন স্থাপনের যাবতীয় যন্ত্রপাতি স্থানীয় মার্কেট থেকেই তিনি সংগ্রহ করেন। ‘অন্য দেশে এ ধরনের স্টেশন স্থাপন করতে (আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী) যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন এ ক্ষেত্রে তার প্রায় ১০ ভাগেরও এক ভাগ অর্থ দিয়েই কাজটি করা যাবে, অনেকটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানালেন উদ্ভাবক রামপ্রসাদ দাস। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ কাজটি চলছে খুবই গোপনে, ভয়ে ভয়ে এবং অনিয়মিতভাবে’। তবে এজন্য দরকার সঠিক পৃষ্ঠপোষতা। দরকার প্রযুক্তিটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনগত স্বীকৃতি। এ যুবক কমিউনিটি রেডিও সম্পর্কে আগে কিছুই জানত না। এ প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার পর তিনি কমিউনিটি রেডিও বিষয়ে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠেন। মনোযোগ দেন তার ‘রেডিও সেন্টারের’ প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিকে। শুধু তাই নয়, এফএম ব্যান্ড রেডিও এবং মোবাইল ফোনেও শোনা যায় অনুষ্ঠান। তিনি প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তার উদ্ভাবিত ট্রান্সমিশন যন্ত্রকে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্বের অনেক দেশেই তাদের স্থানীয়ভাবে তৈরি করা স্টেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান প্রচার করছে। স্থানীয় প্রযুক্তিকে যদি উত্সাহিত করা যায় তাহলে অনেক দিক দিয়ে দেশ ও জাতি লাভবান হতে পারবে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়, প্রযুক্তির সহজপ্রাপ্ততা, সহজে রক্ষণাবেক্ষণ, এমনকি স্বল্প খরচে গুণগতমান বজায় রাখাও সম্ভব হবে তারা মনে করেন।